চিকিৎসকদের সামাজিক মর্য্যাদা নির্ভর করে অনেকটা সেই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর। এটা পুরোপুরি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পলিটিক্যাল ইমেজ। এই ইমেজ দাবী আদায়ের বা জোর করে স্থাপনের বিষয় নয়। এই বিষয়টা বাংলাদেশের চিকিৎসকদের বুঝতে হবে। আরেকটু খোলাসা করে বলি।
ইংল্যান্ডে চিকিৎসকেরা সমাজে হাইলি রেস্পেক্টেড। এই রেস্পেক্টটা এসেছে যেই ব্যবস্থায় তাঁরা কাজ করেন সেই ব্যবস্থার প্রতি সাধারনের সমর্থন ও ভালবাসার কারণে। ইংল্যান্ডের ডাক্তাররা ফ্যাবুলাসলি অয়েলদি নন। সবাই ডিসেন্ট লাইফ লিড করেন কিন্তু উপরি পাওয়া এই সমাজের কালেক্টিভ রেস্পেক্ট। ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার এই ব্যবস্থাই “এন এইচ এস”। যার অধীনে সকল চিকিৎসকেরা কাজ করেন।
এন এইচ এস ইংল্যান্ডে এতো জনপ্রিয় যে মিডিয়াতে সব সময় সেরা কভারেজ পায় এন এইচ এস। সংবাদপত্রে এন এইচ এসের একটা ফিচার থাকবেনা কোনদিন এটা প্রায় অবিশ্বাস্য। এন এইচ এস নিয়ে ফিকশন্যাল টিভি শো অথবা ডকুমেন্টারি হয় প্রায় প্রত্যেক রাতে। আমেরিক্যায় এক সময় ER নামে মেডিক্যাল ড্র্যামা হতো, খুব জনপ্রিয় ছিল। সেই ER আসলে ছিল আরেক তুমুল জনপ্রিয় ব্রিটিশ টি ভির মেডিক্যাল ড্র্যামা ক্যাজুয়াল্টির নকল। মিলস অ্যান্ড বুনের এন এইচ এস লাভ স্টোরি সেকশন আছে। এন এইচ এস নিয়ে মিলস অ্যান্ড বুনের কয়েকটা রোম্যান্টিক নভেলের নাম দেখুন; ভার্জিন মিডওয়াইফ, প্লে বয় ডক্টর, ইমার্জেন্সিঃ অয়াইফ নিডেড। লক্ষ লক্ষ কপি বিক্রি হয় বইগুলি।
ওদেশের মানুষেরা, মিডিয়ার লেখা পড়ে উৎসাহিত হয়, টিভির সিরিয়াল দেখে আনন্দ পায়- ভরসা পায়, মিলস অ্যান্ড বুনের রোম্যান্টিক এন এইচ এস নভেল পড়ে কেঁদে কেটে বুক ভাসিয়ে স্বপ্নের ডাক্তারদের নায়ক ভাবে। আর আমাদের দেশের চিকিৎসকেরা এক গলিত হেলথ সিস্টেমের দাসত্ব করতে করতে ভিলেনের তকমা পায়। তফাতটা এখানেই।

